বেহেস্তি মানুষকে দুনিয়াতে চেনার উপায় তুলে ধরার আগে আসুন মুমিনের বৈশষ্ট্যগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করি। অতপর যেসকল সাহাবী বেহেস্তি হিসাবে সার্টিফাইড হয়েছেন তাদের জীবনী এবং নবী রাসূলদের জীবনীর দিকে একটু আলোকপাত করব।
মুমিনেরা কখনোই দুনিয়ার সুখ শান্তিতে গা ভাসিয়ে দেয় না। তারা গভীর রাতে তাদের বিছানা ত্যাগ করে ভয়ে ও আশায় আল্লাহ তা আলাকে ডাকে। আর আল্লাহর দেয়া রিযিক থেকেই তারা ব্যায় করে।
“আল্লাহর দেয়া রিযিক থেকেই তারা ব্যায় করে” মানে তারা যা সৎ ও হালাল পথে উপার্যন করে তা অল্প হলেও তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকে এবং তা থেকেই ব্যায় করে। আর তা অধিক হলে সেগুলো জমিয়ে না রেখে সেগুলো সৎ পথে ব্যায় করে। অথার্ৎ রিযিক অল্প হলেও সে অনুপাতে ব্যায় করে অধিক হলেও তা উপযুক্ত কাজে ব্যায় করে। অপরদিকে সম্পদকে কুট্টিগত করে রাখাই হচ্ছে কাফেরের বৈশিষ্ট্য।
শয্যা ত্যাগ করা মানে আমরা বুঝি বিছানা ত্যাগ করা। আর বিছানা তো মানুষ দিনের সময় বা সকালে সবাই ত্যাগ করে। কাফের তেকে শুরু করে সবাই বিছানা ত্যাগ করে। তাহলে মুমিনের শয্যা ত্যাগ বলতে বুঝানো হয়েছে , যখন সবাই ঘুমিয়ে থাকে বা বিছানায়া আরাম করতে থাকে তখন মুমিনেরা শয্যা ত্যাগ করে। আর সেটা গভীর রাত ছাড়া আর কখন হতে পারে? আর গভীর রাতে শয্যা ত্যাগ করার উদ্দেশ্য কি তা আল্লাহ বলেই দিয়েছেন। তারা ভয়ে ও আসায় আল্লাহকে ডাকে। ভয় হচ্ছে আল্লাহর শাস্তির ভয়, আর আসা হচ্ছে – ক্ষমা বা আল্লাহর নিয়ামতের আসায় আল্লাহকে ডাকে।
উক্ত আয়াতের যদি গভীর অর্থ আমরা উপলব্ধী করতে চাই তবে বলা যায় – মুমিনেরা স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয় না। সবাই যখন টিকটক আর সোশিয়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার জন্য পেরেশান তখন তারা এসব থেকে সামান্য দূরত্ত্ব বজায় রাখে। সবাই যখন দুনিয়ার সুখ শান্তির জন্য টাকা উপার্জনের পেছনে ছুটছে তখন তারা আখেরাতের সুখ শান্তির জন্য জ্ঞান অর্জন করছে ও আমল করছে। অর্থাৎ বেশিরভাগ মানুষ যা করে তারা তা থেকে একটু দূরে থাকে এবং যা করে তাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি খুজে।
মুমিনের জিহ্বা ও হাত অন্যের ক্ষতি করা থেকে নিরাপদ থাকে। মুমিন কখনো অন্যের হক নষ্ট করে না। মুমিন বান্দা তার পিতা মাতা স্ত্রী সন্তানের হক আদায় করে এবং কখনো অবিচার করে না। সবকিছুর উর্ধে মুমিন আল্লাহকে অধিক ভালোবাসে। মুমিন দুনিয়ার সুখ শান্তি বিক্রয় করে দিয়েছে আখেরাতের বিনিময়ে। মুমিন কখনো বেজার থাকে না। সকল কাজেই আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট থাকে।
মুমিন ফরয বিধানগুলো আকড়ে ধরে থাকে এবং ওয়াদা ভঙ্গ করে না। মিথ্যা বলে না। ওজনে কম দেয় না। নিরবে দান করে এবং সব সময় মধ্যপ্রন্থা অবলম্বন করে।